কুমিল্লায় হাসপাতাল থেকে সাপে কাটা গৃহবধূকে নিয়ে কবিরাজের বাড়ি; অবশেষে মৃত্যু

জহিরুল হক বাবু।।
কুমিল্লার হোমনায় সাপের কামড়ে তানজিনা আক্তার নামে এক গৃহবধুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকালে তাদের নিজ বাড়িতে বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় তানজিনাকে সাপে কাটে। দুপুরের দিকে হাসপাতালে নেয়ার পথে মৃত্যু হয় তার।

তিনি হোমনা উপজেলার গোয়ারি ভাঙ্গা এলাকার আলী আহমেদের স্ত্রী এবং দুই সন্তানের জননী।

পরিবারের সূত্রে জানা যায়, আজ বুধবার সকালে তাদের নিজ বাড়িতে বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থায় তানজিনাকে সাপে কাটে। তবে সাপটিক কোন প্রজাতির তা জানাতে পারেনি কেউ। পরিবারের সদস্যরা তাকে উদ্ধার করে হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসলে তার চিকিৎসা শুরু হয়।

হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, সাপে কাটা তানজিনাকে এন্টিভেনম দেয়ার পর হাসপাতালে ভর্তি থাকার পরামর্শ দেয়া হয়। কিন্তু তার পরিবার সেটি না মেনে তাকে জোরপূর্বক এক কবিরাজের কাছে নিয়ে যায়। সেখানে কোনো কাজ না হওয়ায় আবার হাসপাতালে ফেরার পথে তার মৃত্যু হয়।

তানজিনার স্বামী আলী আহমেদ জানান, সকাল আনুমানিক ৭ টায় নিজ বাড়ির বিছানাতেই শুয়েছিল তানজিনা। এই সময় তার বাম পায়ে আঙ্গুলে সাপের ছোবল টের পায়। উঠে খাটের নিচে তাকাতেই কালো রঙের একটি সাপকে চলে যেতে দেখে। পরে তার শারীরিক অবস্থা অবনতি হলে তাকে হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ সকাল আটটায় নিয়ে যাওয়া হয়। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঔষধ দেওয়ার পর সেখান থেকে স্থানীয় এক কবিরাজের কাছে ‘পানপড়া’ খাওয়ানোর জন্য নিয়ে গেলে সেখান থেকে তানজিনাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। ফেরার পথে তানজিনার শারীরিক অবস্থা আরো অবনতি ঘটলে তাকে আবার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ নেয়া হয়। হাসপাতালে নেয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।

আলি আহমেদ জানান, কি সাপে কেটেছে বলতে পারছিনা। তবে সাপটি কালো রঙের ছিল। স্থানীয়রা এধরনের সাপকে কালি ফানক নামে ডাকে।

হোমনা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার রাশেদুল ইসলাম জানান, সাপে কাটা রোগী তানজিনা আসার পর তাকে অ্যান্টি ভেনম এর ডোজ শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু সেটি মাঝামাঝি পর্যায়ে থাকাকালীন সময়ে তার পরিবারের লোকজন তাকে এক কবিরাজের কাছে জোরপূর্বক নিয়ে যায়। পরে শুনেছি তাকে মৃত অবস্থায় আবার হাসপাতালে আনা হয়েছে।

সাপটি কি ধরনের সেটি তিনি নিশ্চিত ভাবে বলতে পারেননি। তবে তিনি জানান, তানজিনাকে কেটেছে তা বিষধর ছিল।

উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট সাইফুল ইসলাম জানান, তানজিনাকে যখন নিয়ে আসে তখন তার শরীরে বিষক্রিয়ার বিভিন্ন উপসর্গও দেখা গেছে। তার চোখের পাতা বারবার পড়ে আসছিল এবং গলা শুকিয়ে আসছিল। চিকিৎসকরা তাকে এন্টিভেনম দেয়ার মাঝামাঝি সময়ে তার পরিবারের লোকজন তাকে নিয়ে যায়। পরে আবার হাসপাতালে আনলে তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।

     আরো দেখুন:

পুরাতন খবর

শনি রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র
 
১০১১১২১৩
১৪১৫১৬১৭১৮১৯২০
২১২২২৩২৪২৫২৬২৭
২৮২৯৩০  

You cannot copy content of this page